1. banijjobarta22@gmail.com : admin :

ব্যাংক ঋণের সব দায় বোর্ডের: বাংলাদেশ ব্যাংক

  • Last Update: Tuesday, July 19, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংক ঋণের ভালোমন্দের দায় এখন থেকে তারা নেবে না। এই দায় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা বোর্ডকেই নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু পলিসি দেবে।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজেমি সেন্টারে আয়োজিত জরুরী সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন। এসময় সহকারী মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, যে গ্রাহককে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ঋণ দিয়েছে সেটি ভালো হলেও পর্ষদের খারাপ হলেও তার দায় পর্ষদের ওপর পড়বে। যেহেতু ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, খেলাপি সুবিধা পর্ষদ দিবে, রিশিডিউল তারা করবে। তাই ঋণের ভালোমন্দের দিকটাও তাদের নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ঋণ নিয়মিত করার ক্ষমতা এখন থেতে পুরোটাই ব্যাংকগুলোর হাতে দেওয়ায় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা নিয়মিত টাকা ফেরত দিবেন। একইসাথে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনই বলেছিলেন সেন্ট্রাল ব্যাংক এপেক্স বডি হিসেবে কাজ করবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহককে চেনেন। ব্যাংকগুলো রিশিডিউল কীভাবে করবে তারা ঠিক করবে যেহেতু গ্রাহককে তারা চেনেন। কোন খেলাপিকে কি সুবিধা দেওয়া হবে এটা ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ খেলাপিকে সুবিধা দেয়া না, আবার ব্যাংকের গ্রাহককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চেনে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্সপেকশন করবে, অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, সোমবারের সার্কুলারে ঢালাওভাবে খেলাপিকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। একটা পেক্ষাপটের কারণে সার্কুলার হয়েছে, আবার পুনরায় সার্কুলারও হয় অনেক সময়। তবে অপারেশনাল কাজটা ব্যাংকগুলো নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে করবে। এটা তাদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে জবানদিহিতা বাড়বে, খেলাপি কমবে। এ স্বাধীনতা ব্যাংকগুলোর ওপর দেওয়ার ফলে, এখন থেকে ব্যক্তি ও বোর্ডের ওপর দায়ভার চলে যায়।

নতুন ওই সার্কুলার কোন বিশেষ গোষ্ঠীর চাপিয়ে দেওয়া কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান গভর্নর পিওর মানুষ, তিনি ব্যাংকে ওন করেন। নিজ উদ্যোগে তিনি কাজ করছেন। কারো চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তর বাস্তবায়ন করা হয়নি। এই সার্কুলারের পরে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা নিয়মিত টাকা ফেরত দিবেন এবং খেলাপি ঋণ কমে আসবে। এখানে ঋণ বিতরণকারী জুনিয়র কর্মকর্তাদেরও দায়ী করা হবে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্বার্থে ব্যাংকের পর্ষদকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনা জারি করে। ওই নির্দেশনা মতে, ‘এখন থেকে খেলাপি ঋণে কী সুবিধা দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংক মালিকরাই এখন ঋণখেলাপিদের কী সুবিধা দেওয়া যাবে তা ঠিক করে দিবেন। এতো দিন বিশেষ সুবিধায় ঋণ নিয়মিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগতো। সেই ক্ষমতা এখন থেতে পুরোটাই ব্যাংকগুলোর হাতে থাকছে।’

নতুন ওই নির্দেশনা মতে, এখন থেকে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আড়াই থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থ জমা দিলেই হবে। এর আগে নিয়মিত করতে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ জমা দিতে হতো। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় পেলে এখন পরিশোধ করা যাবে ৫ থেকে ৮ বছরে। একই সাথে নতুন করেও ঋণ পাওয়া যাবে। নির্দেশনায় বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ এর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব, বহিঃবিশ্বে সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ার কারণে উদ্ভূত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে। নতুনভাবে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও শ্রেণিকৃত ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে।’

Banijjobarta© Copyright 2022-2023, All Rights Reserved
Site Customized By NewsTech.Com