1. banijjobarta22@gmail.com : admin :

অপ্রদর্শিত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হতে পারে: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

  • Last Update: Wednesday, June 15, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক

অপ্রদর্শিত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যামে তা অর্থনীতির মূল স্রোতে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।  তিনি বলেন,  আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেয়সরবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবকে বিবেচনাযোগ্য।

বুধবার (১৫ জুন) বাজেট ২০২২-২৩: শেয়ারবাজার প্রাসপেক্টিভ শীর্ষক এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে। পল্টনে সিএমজেএফ অডিটোরিয়ামে আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন সিএমজেএফের সভাপতি জিয়াউর রহমান। মূল প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন বিএমবিএর সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান।

উল্লেখ, গত ৯ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। ওই বাজেটে পুঁজিবাজারের প্রাপ্তি ও করণীয় সম্পর্কে পর্যালোচনার জন্য বিএমবিএ ও সিএমজেএফের যৌথ উদ্যোগে ওই আলোচনার আয়োজন করা হয়।

বিএমবিএর সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান ৫ শতাংশ কর দিয়ে শুধু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়াসহ ৫টি দাবি করেন। এসময় শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুপারিশে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী সম্মতি দেন।

ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম দাবিসমূহের পক্ষে মত দিয়ে বলেন, শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে বর্তমান সরকার বেশ সচেতন। আমরা চাই শেয়ারবাজার গতিশীল হোক। শেয়ারবাজার উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সরকারের কর্মসূচির আলোকে শেয়ারবাজার গতি পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের সময় প্রায় ১০ হাজার কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কালো টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এতে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। কালোটাকা সাদা হয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ ভালো অবদান রাখছে।

শামসুল আলম বলেন, যে পরিমাণ কালো টাকা সাদা হচ্ছে সেই পরিমাণ অর্থ অনেক মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেওয়া হয় না। সব সরকারের সময় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমে একদিকে যেমন বিনিয়োগ হচ্ছে অপরদিকে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্চেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি করা হয়েছে। দাবিগুলো আসলে যুক্তিসংগত। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যে সকল দাবি করা হয়েছে বাজেটে তা বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করবো।

বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, এই সুযোগ দেওয়া হলে একদিকে কালো টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় যুক্ত হবে। অন্যদিকে তা শেয়ারবাজারকে গতিশীল হতে সাহায্য করবে। কালো টাকা অর্থনীতির মূল ধারার বাইরে থাকলে তা নানা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহারের আশংকা থেকে যায়।

তিনি তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ১০ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানান। তাতে বড় ও লাভজনক কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, নানা কারণে বড় উদ্যোক্তারা শেয়ারবাজারে আসতে তেমন আগ্রহী নন। তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে ভাল আর্থিক প্রণোদনা প্রয়োজন। অতীতে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে ১০ শতাংশ ব্যবধান ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে তা কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। আামী অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পাশাপাশি অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কারহারও আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে এই দুই ধরনের কোম্পানির কর হারের ব্যবধান সাড়ে ৭ শতাংশই থেকে যাচ্ছে। এটি ভাল কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত করবে। কারণ একটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে অনেক কমপ্লায়েন্স পরিপালন করতে হয়, যার কারণে তাদের ব্যয় বেড়ে যায়। ফলে সাড়ে ৭ শতাংশ কর ছাড় আর আকর্ষণীয় মনে হয় না।

বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট করহারের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটের (মূল্যসংযোজন কর) হারেও ব্যবধান রাখার প্রস্তাব করেন। তিনি তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাটের হার ১০ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানান।

তিনি ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে লভ্যাংশ বিতরণের সময় কেটে রাখা আয়করকে (উৎসে কর) তার চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করা, মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।

Banijjobarta© Copyright 2022-2023, All Rights Reserved
Site Customized By NewsTech.Com